Saturday, 11 February 2023

চট্টগ্রাম নগর পাঠদানের অনুমতি নেই, তবু শিক্ষার্থী ভর্তি

অননুমোদিত বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ফরম পূরণের বিষয়ে ষোলশহর পাবলিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক ভূপাল দাশ গুপ্তের দাবি, শিক্ষা বোর্ডের অনুমতি নিয়েই এত দিন তাঁরা অনুমোদনহীন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিবন্ধন ও ফরম পূরণ করিয়েছেন। এ জন্য শিক্ষার্থীপ্রতি বাড়তি মাত্র ১০০ টাকা করে নেওয়া হতো।

অনুমোদনহীন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের শুধু ষোলশহর পাবলিক স্কুলে নয়, নগরের অন্তত ৩০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিবন্ধন করা হয়। এ জন্য বিভিন্ন খাতে শিক্ষার্থীপ্রতি চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা বাড়তি নেওয়া হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু এত বছর ধরে শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষ কোনো বিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারেনি।

এ বিষয়ে শিক্ষা বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক বিপ্লব গাঙ্গুলী বলেন, এত দিন তথ্য গোপন করে বিদ্যালয়গুলো শিক্ষার্থী নিবন্ধন করাত। বোর্ড নানা সময় বিভিন্ন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করেছে। কিন্তু কাজ হয়নি।

পাঁচ বিদ্যালয়ের চিত্র: শিক্ষা বোর্ড সূত্র জানায়, শর্ত পূরণ না করার কারণে চট্টগ্রাম নগরের শতাধিক বিদ্যালয়ের পাঠদান করার অনুমতি নেই। তবে এসব প্রতিষ্ঠান ঠিকই শিক্ষার্থী ভর্তি করে। পরে অনুমোদন আছে, এমন বিদ্যালয়ে গিয়ে শিক্ষার্থীদের নবম শ্রেণিতে নিবন্ধন ও এসএসসি পর্যায়ে ফরম পূরণ করানো হয়। আর এই সুযোগ নিচ্ছে বেশি কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ষোলশহর পাবলিক স্কুল ছাড়াও এ তালিকায় আছে পতেঙ্গা আইডিয়াল স্কুল, আলহাজ তাজুল ইসলাম উচ্চবিদ্যালয়, ছাফা মোতালেব হাইস্কুল, বাকলিয়া উচ্চবিদ্যালয়, হাস্‌নে হেনা বালিকা উচ্চবিদ্যালয়।

জানা গেছে, চলতি বছরের এসএসসি বা মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষায় ফরম পূরণ শুরু হয় গত বছরের ডিসেম্বরের দিকে। শেষ হয় চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে। আগামী এপ্রিলে এসএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এসএসসিতে ফরম পূরণের জন্য পতেঙ্গা আইডিয়াল স্কুলের নিজস্ব শিক্ষার্থী ছিল ৫১৫ জন।

তারা অন্য ৭ বিদ্যালয়ের আরও ২৯২ জনসহ মোট ৮০৭ শিক্ষার্থীর নিবন্ধনের জন্য শিক্ষা বোর্ডে আবেদন করেছে। আলহাজ তাজুল ইসলাম উচ্চবিদ্যালয়ের নিজস্ব শিক্ষার্থী ৮৬ জন, তারা আরও ৫টি বিদ্যালয়ের ৩৪৩সহ ৪২৯ শিক্ষার্থীর নিবন্ধন জন্য আবেদন করে।

ছাফা মোতালেব হাইস্কুলের নিজস্ব শিক্ষার্থী ৯৯ জন, প্রতিষ্ঠানটি অন্য ৯টি বিদ্যালয়ের ৪১২ জনসহ ৫১১ শিক্ষার্থীর নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছে। অন্যদিকে বাকলিয়া উচ্চবিদ্যালয়ের নিজস্ব শিক্ষার্থী ২৪৯ জন, তারা ১০টি বিদ্যালয়ের ৫০২ জন শিক্ষার্থীর নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছে।

বাকলিয়া উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাকের হোসেন বলেন, অনুমোদনহীন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর কথা চিন্তা করে তাঁরা নিবন্ধন ও ফরম পূরণ করিয়েছেন। এ জন্য শিক্ষার্থীপ্রতি ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা বাড়তি নেন।  ছাফা মোতালেব হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ জিয়া উদ্দিন বলেন, অনেকগুলো প্রতিষ্ঠান এ কাজ করে আসছিল, এ জন্য তাঁরাও নিবন্ধন ও ফরম পূরণ করেছেন। তবে এখন থেকে আর করবেন না।

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামরুল আখতার বলেন, তথ্য গোপন করে অননুমোদিত প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের নিবন্ধন ও ফরম পূরণের সুযোগ নেই। বিষয়টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে


শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios: